Mahmuda Rani : এখন থেকে তুলশীমালা চালই অর্ডার দিও
Mahmuda Rani : বিবাহিত জীবনের বারো বছর চলছে আমার। বিবাহিত জীবনের এত গুলো বছরে কোনদিন আমি ১০ টাকার কাঁচামরিচ ও কিনি নাই। সংসারের বাজার দায়িত্বটা সম্পূর্ণ আমার বরের হাতে। আমার বর বাজার করতে পছন্দ করে৷ প্রতিমাসে আমি তাকে লিস্ট করে দেই আর সেই লিস্ট মত সে প্রয়োজনীয় সব কিছু কিনে আনে। বাকি কোন কিছু টুকটাক দরকার হলে আমার হেল্পিং হ্যান্ডকে দিয়ে আমি আনাই। কিন্তু আমি কখনও কিনি না।
তো ফেব্রুয়ারিতে যখন আমি উইতে ঢুকে তখন উইতে তুলসীমালার খুব পোস্ট দেখতাম। একদিন সাহস করে আমার বরের অনুমতি ছাড়া দেলওয়ার ভাইয়ের কাছে ১০ কেজি তুলশীমালা চাল অর্ডার করি! চাল অর্ডার করেছি সেটা বরকে জানাই নাই। চালের জন্য টাকা লাগবে সেটাও ওর কাছে চাই নাই আমার থেকেই আমি পেমেন্ট করলাম।
এরপর কুরিয়ার থেকে ফোন আসলো চাল এসেছে। যেহেতু চালের একটা মোটামুটি বড় ব্যাগ হবে আর সেই ব্যাগ আমি আনতে গেলে আমার বর দেখলেই শুরু হবে নানান প্রশ্ন! তাই আমি না যেয়ে আমার ভাইকে পাঠালাম কুরিয়ার অফিসে। আর ওকে বলে দিলাম চাল নিয়ে সরাসরি আমার মায়ের বাসায় যেন চলে যায়। পরে ভাই তাই করলো। পরে আমার মাকে বললাম তুমি ৫ কেজি রেখে আমার জন্য ৫ কেজি নিয়ে আসো। মা পরে আবার বাসায় চাল নিয়ে আসলো।
এবার আমার মা ২/৩ দিন পোলাও রান্না করে আমার আব্বুকে খাওয়ালো। আব্বুর নাকি খুব পছন্দ হয়েছে এই চালের পোলাও। এরপর একদিন মা তুলশীমালা দিয়ে খুঁদের ভাত রান্না করে কয়েক রকম ভর্তা করে আমার বাসায় পাঠালো। সেই খুঁদের ভাত খেয়ে আমার বর বললো আজকের খুঁদের ভাতটা অন্য রকম মজা লাগছে!বললো চালটা একটু কেমন জানি! আমি তখনও কিছু বলি নাই চুপ ছিলাম।
এবার বলি আজকের ঘটনা।
আজকে দুপুরে আমার বর বলেছে পোলাও রান্না করতে৷ তখন আমি সুযোগ বুঝে বলে ফেললাম পোলাওয়ের চাল তো নেই (নরমালি এতদিন প্রানের কালজিরা চালটা খেতাম) আর সাথে বললাম সেদিন যে মা খুঁদের ভাত রান্না করেছিলো সেই চালটা আছে। সেটা দিয়ে রান্না করতে পারি তবে একটু মোটা মোটা হবে।
তখন আমার বর সাথে সাথেই বলে ফেললো ঐটা দিয়েই রান্না করো! আমিও দিলাম রান্না করে পোলাও।
দুপুরে আমার বর আর ওর ২ জন বন্ধুকে খেতে দিলাম। পোলাও দেখার পরই আমার বর বললো আজকে পোলাও এত সাদা হলো কি করে? পোলাওয়ে কি দুধ দিয়েছো? আমি আগে মাঝে মাঝে দিতাম।
তখন আমি বললাম না তো আজকে এমনিতেই রান্না করছি। পরে পোলাও খাওয়ার সময় আমার বর সহ তিনজনই একসাথে বলে ওঠলো পোলাও টাতো অনেক বেশি মজা হয়েছে! চালটা অনেক ভালো পরছে! কি সুন্দর মিস্টি মিস্টি একটা স্বাদ আর মৃদু একটা ঘ্রান!
তখন আমি সবাইকে বললাম এই চালটা শেরপুর থেকে এনেছি। এটার নাম তুলশীমালা চাল। আমার কথা শুনে আমার বর অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো! কারন আমি চাল কিনেছি তাও আবার অনলাইনে!
আমার কথা শুনে জিজ্ঞেস করলো চাল আর কতটুকু আছে? পরে বললাম আছে ২ কেজির মত। পরে সে বললো তাহলে এখন থেকে এই চালই অর্ডার দিও এখন থেকে এই চালের পোলাও খাবো?
সাথে আরেকটা কথা বলছে! আমার বর দেলোয়ার ভাইকে শেরপুর থেকে দেশী মুরগী আর দেশী মুরগীর ডিমও দিতে বলছে? আর জানতে চাইছে আর কি কি আছে শেরপুরের বিখ্যাত খাবার।
এবার বলেন দেলোয়ার ভাই আমার বরের জন্য তুলশীমালা চালের সাথে দেশী মুরগী কিভাবে দিবেন?
আমি তো রাজিব স্যারের ধান্দায় পরে আমার বরেরও ব্রেইন ওয়াশ করা শুরু করে দিয়েছি। মাএ তো শুরু করলাম তুলশীমালা দিয়ে! তুলশীমালা চাল দিয়ে পোলাও রান্না করা ক্ষেতের পিক দিলাম?
Image of Mahmuda Rani.