Our Sherpur

১০ মিনিট রাইটিং দ্বিতীয় সিরিজ পোস্ট | জেলা পণ্যের প্রচার

১০ মিনিট রাইটিং দ্বিতীয় সিরিজ পোস্ট ২২৬

রাজিব আহমেদ: “ই-ক্যাব নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখলাম যে ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের সিংহভাগ ঢাকা কেন্দ্রি। ২০১৫ সালের কথা এটা। তখন কক্সবাজার থেকে লিটন ভাই শুটকি নিয়ে কাজ করছেন, এখনো আছেন। স্কাইপ আড্ডায় প্রায় প্রতি রাতেই জয়েন করতেন। এরপর হাসান রাজ ভাইকে পেলাম সাতক্ষীরাশপ নিয়ে। তিনি অবশ্য ঢাকাতেই থাকতেন কিন্তু তার ওয়েবসাইটে ছিল সব সাতক্ষীরা জেলার পণ্য।

২০১৫ অনলাইনে জেলা পণ্য নিয়ে খুব বেশি উদ্যোগ ছিল না। এর কারণ বুঝার চেষ্টা করতাম। ২০১৮ সালে ডিজিটাল স্কিলস গ্রুপে জেলা ভিত্তিক ওয়েবসাইট করার জন্য বলা শুরু করলাম। দেলোয়ার ভাই তখন শেরপুরে থাকতেন এবং তিনি করলেন Our Sherpur ওয়েবসাইট। এখনো তা টিকে আছে। আরো বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও টেকেনি।

Products list of Our Sherpur
শেরপুর জেলার যেসব পণ্য আওয়ার শেরপুর এ পাওয়া যায়।

২০১৯ সালে উইতে একটিভ হলে কাকলি আপু আর নিগার আপুদের কারণে নারায়নগঞ্জের জামদানি আর টাঙ্গাইলের খেশ শাড়ি সম্পর্কে জানা শুরু হয় আমার। তখন উইতে এরপর প্রায় দুই বছর চলে যায় এবং অনেক দেশি পণ্যের কথা জানতে পারি বিভিন্ন জেলা থেকে। শেরপুরের তুলশীমালা চাল সরাসরি প্রমোট করা শুরু করি এবং অনেক বিক্রি হয়। রংপুরের শতরঞ্জির কথাও বলতাম অনেক জায়গাতে। আরো অনেক জেলা ভিত্তিক পণ্যের কথা বলি। তবে এসবের আগে ছিল হাসানুজ্জামান সুজন ভাইয়ের সাবিত্রী মিষ্টি মেহেরপুরের। অনেক বিক্রি হয় তা। সালমা নেহা আপুর কারণে জানলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার আদি চমচমের কথা উই গ্রুপে।

আরও পড়ুন: ১০ মিনিট রাইটিং দ্বিতীয় সিরিজ

২০২১ সালের শুরু থেকে আরিফা আপুর কারণে ময়মনসিংহ নিয়ে আগ্রহী হই এবং আশা আপু ময়মনসিংহের জেলা পণ্য নিয়ে লেখা শুরু করেন আর পপি আপু টাঙ্গালের জেলা পণ্য নিয়ে। রুকু আপুদের টিম দিনাজপুরের জেলা পণ্য, চট্টগ্রাম থেকে আরজু আপুরা, ফেনী থেকে রাখি আপুরা, কুমিল্লার অনেক আপু, রাজশাহী, বগুড়া, খুলনা, যশোর এমনি প্রায় ৩০ জেলা থেকে আপুরা দেশি পণ্য নিয়ে লেখা শুরু করেন আরিফা মডেলের শুরুর দিকে।

জেলা ওয়েবসাইট নিয়ে আমাদের পড়াশোনা
জেলা পণ্য নিয়ে লেখাপড়া

এভাবে মার্চ ২০২১ থেকে এখন পর্যন্ত ডিজিটাল স্কিলস গ্রুপেই মনে হয় বিভিন্ন জেলার পন্য নিয়ে কয়েক লাখ পোস্ট এসেছে। সার্চ করলে প্রায় সব জেলার পন্য সম্পর্কেই তথ্য পাবেন। নিগার আপুর দেশি পণ্যের সিলেবাস এদিকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। যদিও দেশি পণ্যের সিলেবাসের আইডিয়া আমার কিন্তু পুরো কাজ আপুর।

২০২২ সালের শেষের দিকে আশা আপু আমাকে জিআই পণ্য নিয়ে বলা শুরু করলেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হল জিআই পণ্য নিয়ে চেষ্টার যাত্রা। অনেক পণ্যের ডকুমেন্টশন করেছেন আমাদের আরিফা মডেলের আরিফা আপুরা। সাধারণ মানুষ এভাবে জিআই পণ্যের তথ্য সংগ্রহ করে কাজ করছে এমন উদাহরণ সম্ভবত আর কোথাও নেই। এক সময় হয়তো সারা বিশ্বে আমাদের আপুদের কাজের কথা প্রচার হবে। না হলেও ক্ষতি নেই। কারণ জিআই পণ্য নিয়ে গত ১০ বছরে যা হয় নি তার থেকে অনেক বেশি কাজ হয়েছে গত ১০ মাসে আরিফা মডেলের আপুদের কারনে।

আরিফা মডেল এখন জেলা পণ্য থেকে সরে এসে পারসোনাল ডেভেলপমেন্ট এর দিকে চলে গেছে। এটার ভাল ও খারাপ দুই দিকই আছে। তবে আমি বুঝতে পেরেছিলাম ২০২১ সালের শেষের দিকে যে আগে বেসিক স্কিল আর নলেজ এর ভিত তৈরি করা দরকার। তারপর যে কেউ চাইলে জেলা পণ্য নিয়ে অবদান রাখতে পারবে।

১০ মিনিট রাইটিং দ্বিতীয় সিরিজের পোস্ট গুলোর কারনে আশা করি এক সময় উপজেলা পণ্য নিয়ে অনেকে পোস্ট দেবেন, কাজ করবেন। আজ না হলেও ১০ বছর পরে হলেও হবে এই আশা আমার। জেলা পণ্য নিয়ে এত গুরুত্ব দেই কেন? কারণ জেলা পর্যায়ে যত বেশি লেনদেন হবে তা জেলার অর্থনিতির ভিত মজবুত করবে। ডলার সংকটের কথা যেভাবে প্রতিদিন মিডিয়াতে আসছে তাতে করে এক সময় সরকার বাধ্য হবে জেলা পণ্যের দিকে ফোকাস করতে।

২০১৪ সালের এই সময়ে মানে আজ থেকে নয় বছর আগে বলতাম ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি অনেক বড় হবে, কয়েক লাখ লোক কাজ করবে, শিক্ষিত লোকের ইন্ডাস্ট্রি ইত্যাদি। এ নিয়ে অনেক ব্যঙ্গ বিদ্রুপ হত। এসব কথা অনেকবার বলেছি। জেলা পণ্য নিয়ে আমি ২০২১ সাল থেকে সিরিয়াস ভাবে চেষ্টা করা শুরু করি ডিজিটাল স্কিলস গ্রুপে আরিফা মডেলে। ২০২৩ সালে এসে ডলার ক্রাইসিসের কারণে আর কেউ এ নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে না। কারণ ডলার সংকট মোকাবেলার একটাই উপায়- দেশি পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ানো। দেশি পণ্য উৎপাদিত হয় কোথায়? শুধু ঢাকাতে? না দেশের সব জেলাতেই এবং এসব পণ্য ঢাকায় আসে।

আরিফা মডেলের আরিফারা
আরিফা মডেলের আরিফারা

অনেকে আবার মনে করে যে আরিফা মডেলের আপুরা সব গৃহ বধু। তারা কেন সেল বাদ দিয়ে এসব নিয়ে লেখাপড়া করবে, মাথা ঘামাবে ইত্যাদি। আসলে আরিফা মডেলের আপুরা দক্ষ, শিক্ষিত এবং তারা জেলা নিয়ে, জেলা পণ্য নিয়ে অনেক বেশি জানে কারন তারা চেষ্টা করছে ২ বছর ধরে। ১ জন রাজিব আহমেদ, আশা আপু বা আরিফা আপু হয়তো কেউ নয় কিন্তু ১ হাজার জন মিলে যখন জেলা পণ্য নিয়ে ফেইসবুকে লেখে তখন অনেক ভাল কিছুর বড় কিছুর ভিত তৈরি হয়।”

রাজিব আহমেদ স্যার যখন নিজের ওয়েবসাইটে ১০ মিনিট রাইটিং দ্বিতীয় সিরিজের লিংকগুলো আপলোড করবে তখন এখানে যুক্ত করে দেব।

Leave a Reply

Scroll to Top