পুষ্টিবঞ্চিত হওয়ার কারণ সেদ্ধ চাল
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : বাংলাদেশ, আফ্রিকা সহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মানুষ নিয়মিত খায় সিদ্ধ চালের ভাত। আর ভিয়েতনাম, জাপান, চীন, ফিলিপাইন, কোরিয়া সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশির ভাগ দেশের মানুষ খায় আতপচালের ভাত। তাই তাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও বেশি।
সিদ্ধ চালের ভাত হয় ঝরঝরে আর আতপচালের ভাত হয় আঠালো ও সুস্বাদু। ধান সিদ্ধ ও শুকানোর কারণে চালের গুণাগুণ নষ্ট হয়। যে আতপচালে হয় না। সিদ্ধচালের তুলনায় আপতচালে পুষ্টিগুণ বেশি। আতপচালের ভাত তরকারি ছাড়াও খাওয়া যায় কিন্তু সিদ্ধচালের ভাত তরকারি বা অতিরিক্ত কিছু না মিশিয়ে খাওয়া সম্ভব হয় না। ভাতে সাথে অত্যধিক মসলা ও ভোজ্যতেলের তরকারি ব্যবহার করায় গ্যাস্ট্রিক, আলসার বা হার্টের সমস্যা সৃষ্টির প্রবণতা বেশি। রান্নাতেও সময় লাগে সিদ্ধ চালে। ভাতের মাড়ের সাথে ১৫ শতাংশ পুষ্টিগুণ ফেলে দেওয়া হয়। আপতচালের তুলনায় সিদ্ধ চালের ভাত বেশি খেতে হয়।
সেদ্ধ ধানের চাল প্রক্রিয়াজাত হতে অনেক সময়, শ্রম ও জ্বালানি ব্যায় হয়। প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে পাওয়া যায়, ধান সিদ্ধ করে চাল করতে যে সময়, শ্রম ও জ্বালানি ব্যায় হয় তা যদি প্রতি কেজি বাড়তি ২ টাকাও খরচ ধরা হয় তাহলে বছরে বাড়তি খারচ হয় প্রায় হাজার কোটি টাকা। উল্লেখ্য, দেশে প্রতি বছর দেশে তিন কোটি টন ধান সেদ্ধ ও শুকানো হয়।
চাল কম ভাঙা, ভাত ঝরঝরে হওয়া, সহজে সংরক্ষণ করা, কোষ্টকাঠিন্য না হওয়া ইত্যাদি কে ধান সিদ্ধ করার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অথচ ভিয়েতনাম, জাপান, চীন, ফিলিপাইন, কোরিয়া সহ যেসব দেশ গুলোতে ধান সিদ্ধ করা হয় না সে সব দেশের তুলনায় বাংলাদেশে পাইলসের হার কয়েকগুণ বেশি। বিশেষজ্ঞরা মনে করে, “পুষ্টিবঞ্চিত হওয়ার মূল গলদটাই শুরু হয় ধান সেদ্ধ থেকে। এটি পুষ্টির জন্য ক্ষতিকর অনেক নেতিবাচক কারণের জন্মদাতা।” তুলশীমালা ধান সিদ্ধ করা হয় না, তাই তুলশীমালা চাল আতপ প্রজাতির চাল।