শেরপুরে বসবাস কারী জনগণ
হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এবং আদিবাসী লোকের বসবাস এই শেরপুর জেলায়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর অধিকাংশ হিন্দু ভারতে চলে গেছে। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় অনেক আদিবাসীও ভারতে চলে গেছে।
শেরপুরের বৈচিত্র্য আদিবাসী সম্প্রদায় সাধারণত গারো, হাজং, রাজবংশী, কোচ, হাদি, বানাই, ডালু প্রভৃতি। তাদের বসতি গারো পাহাড়ে বেশি ছিল। গ্রামেও কিছু কিছু দেখা যেত। আজকাল দুই-চার ঘর ছাড়া আর দেখা যায় না। আদিবাসীরা সাধারণত বনে জঙ্গলে, পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করতে ভালোবাসে। তারা বেশ স্বাস্থ্যবান এবং শক্তিশালী, দেখতে খাটো নাক চেপ্টা, মুখ গোলাকৃতি। এরা বনে কাঠ এবং লাকড়ি সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে।
কেউ কেউ কৃষি কাজ, পশুপালনও করে থাকে। অন্যের কৃষি কাজ করে মজুরী গ্রহণ করে। বনের ফলমূল এবং এক জাতীয় জংলী আলু সংগ্রহ করেও জীবিকা নির্বাহ করে। কাছিম হলো এদের প্রিয় খাদ্য। তাই সকাল হতে পুরুষরা এক কইলা নিয়ে দূরদূরান্তে খাল-বিলে নদীতে কাছিম ধরার জন্য ব্যস্ত থাকে। যা পায় তা নিয়ে সন্ধ্যায় ঘরে ফেরে। আর মহিলারা, পিঠে খাঞ্চি বেঁধে একটি খন্তি নিয়ে জঙ্গলে খাদ্যের অন্বেষণে বের হয়। যাদের ছোট বাচ্চা আছে তারা কাপড় দিয়ে পিঠের উপর বেধে বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে যায়। মাটি বা কুঁড়ের ঘরে বসবাস করে। পূর্ণ শরীর ঢেকে তারা কাপড় পড়ে না। এক টুকরো কাপড় পরেন এবং বুকে জড়িয়ে রাখে।
আদিবাসীদের মধ্যে শিক্ষার প্রচলন চোখে পরে না। তবে আজকাল সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য অনেকে বিদ্যালয়ে যায়। তারা অনেক দেবদেবীর পূজা করে। বিবাহ ও অন্যান্য পর্বের সময় ঢোল, ঢাক-ঢঙ্কা বাজিয়ে, নেচে-গেয়ে উৎসব পালন করে এবং ভোজের আয়োজন করে থাকে।
সূত্র- শেরপুর জেলার ইতিবৃত্ত