Our Sherpur

তুলশীমালাকে ঘরে আনার গল্প – Tasnim Tamanna

Tulshimala Rice

তাসনিম তামান্না: আমার প্রাণপ্রিয় উইবাসী, সবাই কেমন আছেন? অবশ্য আমরা উইবাসী সবসময় আনন্দেই থাকি। কারণ এতটা ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন আর কোনো গ্রুপ আছে বলে আমার মনে হয় না। তাই আমরা ভাল থাকি এবং কোনো সংকটময় সময় আসলেও একজোট হয়ে থাকি।

ছবি চোখে পড়াতেই বুঝে গেছেন কিসের কথা বলতে এসেছি। হ্যাঁ, আমাদের দেলোয়ার ভাইয়ের তুলশীমালার কথা বলতে এসেছি। সেই অনেকদিনের জমানো ইচ্ছা অনুযায়ী গত ৭ তারিখে ভাইয়ার কাছে তুলশীমালার অর্ডার কনফার্ম করি। অনেক দিনের জমানো ইচ্ছা বললাম কারণ যখন থেকে উই-কে বুঝতে শুরু করেছি তখন থেকে তুলশীমালা এর রিভিউ দেখে দেখে নেওয়ার প্রবল ইচ্ছা জন্মে গেছিল। প্রথমে একবার আম্মুকে বলি কিন্তু নিব নিব করে নেওয়া হয় নি। তারপর চাকরিতে জয়েন করে ভাবলাম নিজের বেতন থেকে কিনে মা-কে উপহার দিব। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে তাও হয়ে উঠল না। শেষমেষ ঈদের বাজারে কিছুটা জোরপূর্বক লিস্টে তুলশীমালা জুড়ে দিয়েছিলাম। ?

আমার মা যিনি বাবা মারা যাওয়ার পর একা হাতে বাবার বেতনের অর্ধেক হয়ে আসা পেনসন দিয়ে পুরো বাড়ি সামলে রেখেছেন এতদিন, স্বাভাবিকভাবেই খুব মেপে সংসার চালাতে হয়েছে তাকে। তাই তুলশীমালার দাম শুনে প্রথমে একটু ঘাবড়ে গেছিলেন। আমি তাকে আশ্বস্ত করি। তবুও দোটানা মন নিয়ে রাজি হন। আমি অনলাইন কেনাকাটার সাথে সুপরিচিত হলেও আমার মা তেমন পরিচিত নয়। তিনি শুধু জানেন যে হ্যাঁ অনলাইনে বেচাকেনা হয়। কিন্তু কিভাবে তা জানতেন না। তাই যখন অগ্রীম বিকাশ পেমেন্ট-এর কথা বলি তখন তিনি আরেক দফা আশংকা প্রকাশ করলেন। আমি এবারও তাকে বুঝিয়ে বললাম। তারপর অনেক প্রতিক্ষা নিয়ে ছিলাম কবে পাব, কবে পাব করে।

আমি ভাইয়ার কাছে আগেই জিজ্ঞেস করে নিয়েছিলাম কবে নাগাদ আসবে। উনি বলেছিলেন স্বাভাবিক ভাবে ৯ তারিখে পৌঁছানোর কথা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে দেরি হতেও পারে। তাই ১০/ ১১ ধরে রাখা যায়। আমার পার্সেল ৯ তারিখে চলে আসে কিন্তু ভাইয়ার কুরিয়ার ম্যান ভুল করে দুই জায়গায় (প্রাপক ও প্রেরক)- তেই উনার নাম্বার দিয়ে দেওয়াই আমার কাছে আর কল আসে নি। এদিকে আমি অপেক্ষায় আছি কখন কল দেই!!!

গতকাল যখন ভাবছি ভাইয়াকে একবার জিজ্ঞেস করে দেখব, তখনই দেখি ভাইয়ার মেসেজ সেই নাম্বার ভুল হওয়ার ব্যাপারে। তারপর আমি ভাইয়ার থেকে কুরিয়ার ওয়ালা-দের নাম্বার নিলাম। আজ সকালে ১০ টা নাগাদ কথা বলে কুরিয়ার অফিসে যেয়ে আমার বহু আকাঙ্ক্ষিত তুলশীমালা-কে ঘরে আনলাম। এখন আমি খুশি। অনেকগুলা খুশি। আম্মাও বুঝলেন যে অগ্রীম পেমেন্ট দিয়েও অনলাইনে কেনাকাটা করা যায় নিশ্চিন্তে। তাই আম্মাও চাল দেখে খুশি।

এই ছিল আমার তুলশীমালাকে ঘরে আনার গল্প। তবে ভাইয়া একজন কাস্টমার হিসেবে প্যাকেটিং সমন্ধে কিছু কথা ছিল। আমার বাসায় বড় বোনের দুই বছরের একটা বাচ্চা আছে যে খুবই দুর্দান্ত। তাকে দুটো মিনিট স্থির করে বসিয়ে রাখা যায় না। আর নতুন কিছু বাড়িতে আনলে তো কথায় নেই, সেই আগে ঝাপ দিয়ে পড়বে। তো বক্স খোলার পর সে চালের প্যাকেট ধরে টান দেয়‌।? আমি বুঝি নাই যে পলির মুখ শুধু ফোল্ড করা ছিল। ফলাফল যা হওয়ার তাই হল। কিছু চাল মেঝেতে ছিটে পড়ে গেল। তাই ভাইয়া সিলড্ করা প্যাকেট হলে আমি মনে করি ভাল হবে। এরকম বাচ্চাকাচ্চার হামলায় সুরক্ষিত থাকবে। ?

আজকে ইফতারে তুলশীমালা-এর খিচুড়ি করতে বলেছি আম্মুকে। খেয়েদেয়ে আরেকবার আনন্দের রিভিউ দিব নি। এখন এটা পড়েন আর তুলশীমালার ফ্যান হয়ে উঠেন।??

Leave a Reply

Scroll to Top