সীমান্তকন্যা গারো পাহাড়ের কোল ঘেষে অবস্থিত সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলে ভরপুর দেশের প্রান্তিক জেলা শেরপুর। প্রায় ১৫০ বছর পূর্বে ১৮৬৯ সালের ১ এপ্রিল শেরপুর পৌরসভার জন্ম হয়। এমনকি ময়মনসিংহ পৌরসভার আগে শেরপুর পৌরসভার জন্ম হয়েছে। বর্তমানে পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন। তিনি এ পৌর সভাকে দেশের সেরা পৌরসভা হিসেবে গড়ে তোলতে চান। শেরপুর পৌরসভা নিয়ে তাঁহার স্বপ্ন গ্রিন ও ক্লিন টাউন হিসেবে গড়ে তোলা। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় শেরপুর পৌরসভাকে সামনে এগিয়ে নিতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন পৌর পিতা এবং পৌর কতৃপক্ষ। শহরবাসীর সমস্যা খুজে বের করে তা দ্রুত সমাধান করার জন্য পৌর কতৃপক্ষ সচেতন রয়েছে। কাঙ্খিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য যে পরিমাণ সরকারি অর্থের বাজেট প্রয়োজন, সে পরিমাণ বাজেট নেই। সরকারি এডিপি মাত্র ৭৭ লাখ টাকা। তাই বলে কি উন্নয়ন বসে থাকবে? পৌর পিতার জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা এবং বিচক্ষণতা দিয়ে পৌরসভার কর আদায়, অন্য আয় বৃদ্ধি এবং নিজেদের তহবিল থেকে রাস্তা, ড্রেনসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছেন নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে। বিশেষ করে ইউজিপ-৩ প্রকল্পের মাধ্যমে শহরের প্রধান প্রধান রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। মাননীয় মেয়র মহোদয়ের এটি দ্বিতীয় মেয়াদের দায়ীত্ব গ্রহণ। তিঁনি প্রথম মেয়র হন ২০০৪ সালে এবং দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র হন ২০১৬ সালে। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর শেরপুর পৌরসভার রাস্তাঘাটের খুবই শোচনীয় অবস্থা তাঁর চোখের সামনে ভেসে আসে। তারপর তিঁনি জনগনের চলাচলের কষ্ট কে লাগব করার জন্য শুরুতেই রাস্তার উন্নয়ন কে প্রাধান্য দিয়ে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে গোয়ালপট্টি মোড়, খরমপুর মোড় থেকে থেকে কলেজ মোড়, নিউমার্কেটের অভ্যন্তরীণ, সিভিল সার্জন অফিস থেকে ঢাকলহাটি হয়ে দীঘারপাড় পর্যন্ত, শেখ হাটি থেকে ঢাকলহাটি এবং নবিনগর মোড় থেকে ফ্যাক্টরি (রসিদা বিড়ি) মোড় এবং তেরাবাজার রাস্তার কাজগুলো হাতে নেন এবং সম্পন্ন করেন। সামান্য বৃষ্টির পানিতে পৌরবাসীর শুরু হয় সীমাহীন কষ্ট তাই পৌর পিতা বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে মীরগঞ্জ থানাঘাট পর্যন্ত ড্রেনের কাজ সম্পন্ন করেন। তাছাড়াও ইউজিপ-২ প্রকল্প থেকে ৩ বছরে শেরপুর শহরের প্রধান ড্রেনগুলো যেমন- খোয়ারপাড় মোড় থেকে জেলখানা মোড়, খোয়ারপাড় মোড় থেকে কামারিয়া পর্যন্ত পৃথক দুটি ড্রেন নির্মাণাধীন রয়েছে। তারপরও ড্রেনের চাহিদা রয়ে গেছে এবং যত তারাতারি সম্ভব তা নির্মাণ করা হবে। সুস্থ থাকার জন্য বিশুদ্ধ পানি পৌরবাসীর প্রতিটি মুহূর্তে প্রয়োজন। বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে নতুন গোহাটায় একটি ওভারহেড পানির ট্যাংক নির্মাণাধীন রয়েছে। শুধু রাস্তা ঘাট আর ড্রেনের উন্নয়নে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, সে সাথে গুরুত্ব দিতে হবে সামাজিক নিরাপত্তার দিকে তাই, পুরো পৌরসভায় মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বাল্যবিবাহ ও ইভটিজিংমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য নিরলশ ভাবে কাজ করা হচ্ছে। যুব সমাজ কে নেশা মুক্ত এবং অপরাধমূলক কর্মকান্ড থেকে মুক্ত রাখার জন্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে সুস্থ মন ও দেহ গঠনে বিভিন্ন সংগঠনকে উৎসাহিত করা হয়ে থাকে। নারীদের চর্চার সুবিধার্থে গঠন করা হয়েছে পৌর লেডিস ক্লাব ও পৌর কিশোরী ক্লাব। তাছাড়াও সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন সংগঠন, ডিজিটাল পৌরসভা করতে উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ভাবে উৎসাহিত করা হয়। আকর্ষণীয় পর্যটন শিল্প নগরী হিসাবে পরিগণিত হয়েছে দেশের প্রান্তিক জেলা শেরপুর। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ২৬০ ফুটের অধিক লম্বা একটি টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ টাওয়ার শেরপুরকে যেমন করবে আকর্ষণীয় ঠিক তেমনি পর্যটকদেরও আকর্ষণ করবে। শেখ হাসিনা টাওয়ার নির্মাণ করতে পারলে শেরপুর হবে বাংলাদেশের একটি মডেল টাউন। পৌরবাসীর জন্য পরিচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা শুরু করেছি রাত্রিকালীন পরিচ্ছন্নতা অভিযান। প্রতিরাত ১০টার পর থেকে পৌরসভার ভিতর শুরু হয় ময়লা সংগ্রহের কাজ। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে চলছে দিনে দিনে, তাই শেরপুর পৌরসভাকে গ্রিন টাউনে পরিণত করতে আমরা শহরের বিভিন্ন মহল্লায় বৃক্ষরোপণ শুরু করেছি এবং শহরের এটিআইয়ের পাশে ফুলের বাগান তৈরি করেছি। ফুলের বাগানে ভরে দিতে চাই উল্লেখযোগ্য স্থান গুলো। পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় যানজটমুক্ত শহর গড়তে কার্যক্রম চলছে। রিক্সার তুলনায় ইজিবাইক জনগনের অর্থ সাশ্রয় করে, তাই তা বন্ধ না করে টিকিয়ে রাখতে এবং যানযট মুক্ত শহর রখতে চলাচলকারী ইজিবাইকগুলোকে দুটি ভিন্ন রং ও জোড়- বেজোড় নাম্বারে বিভক্ত করে জোড়-বেজোড় তারিখে শহরে চলাচল করার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।