শেরপুর জেলার নামকরণ
মোঘল সম্রাট আকবর ১৫৮০ সালে তাঁর অন্যতম সভাসদ টৌডর মল্লকে এই শেরপুর অঞ্চলে পাঠান। তিনি বাংলার ভূমি ও রাজ্যের বন্দোবস্ত করেন। বন্দোবস্ত অনুসারে সুবা বাংলাকে মোট ২৪টি সরকারে বিভক্ত করেন এবং করতোয়া ও ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী অঞ্চলে বঙ্গকে সরকার বাজুহা নাম রাখেন।
এই সরকার বাজুহাকে আবার ৩২টি মহাল বা পরগনায় বিভক্ত করেন এবং ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তর পূর্ব অঞ্চলেের নাম রাখেন দশকাহনিয়া বাজু। এর নামকরণ সমন্ধে বিভিন্ন লেখকের ধারণা ভিন্ন লক্ষ করা যায়। ১৫৯৫ খ্রিষ্টাব্দে আবুল ফজল রচিত ‘আইন-ই-আকবরী’ গ্রন্থে শেরপুর অঞ্চলের নাম ‘দশকাহনিয়া’ নামে বর্ণিত আছে।
দশকাহনীয়া নামকরণের অনেকগুলো মতবাদের মধ্যে, শেরপুরের ইতিকথা গ্রন্থে লেখক অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেনের মতে, পূর্বকালে ব্রহ্মপুত্র নদ অনেক প্রশস্ত ছিলো। বর্তমানে শেরপুর থেকে যেতে হলে খেয়া নৌকায় নদী পাড়ি দিতে হত, যার ভাড়া ছিল দশকাহন। সে অনুসারে উক্ত মহালের নাম ছিলো দশকাহিনিয়া।
শ্রী গোপাল দাস কুন্ডের বগুড়া শেরপুরের ইতিহাসে, যে বিবরণ দেয়া আছে তাতে শেরপুর মরিচা (বগুড়া) হইতে শেরপুর আসার মাশুল দশকাহন ছিলো। কোন কোন ঐতিহাসিকদের মতে এ অঞ্চলের প্রজাদের উপর দশকাহন করি ধার্য ছিল সেখান থেকে দশকাহিনিয়া নাম হয়েছে। ‘ যে সংগ্রামের শেষ নেই, গ্রন্থে প্রমুথ গুপ্তের মতে, ১৫৮৪ সনে সাহাবাজ খাঁ কম্বো বাংলার শাসণকর্তা নিযুক্ত হন। তাদের অধীনে শের আলী হাজী ছিলেন এই দশকাহনীয়া মহলের ভূম্যাধিকারী। এই শের আলী গাজীর নাম অনুসারে এই মহালের নাম শেরপুর নামে অভিহিত। এছাড়া শ্রী বিজয় চন্দ্র নাগ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, হিউ-এন-সাং সহ অনেকেই এ বিষয়ে বিভিন্ন মতামত দেন।
তথ্য সূত্রঃ ইতিহাস ও ঐতিহ্যে গড়জরিপা।