জিতে গেলাম মন্ডা বাজিতে
রফিক মজিদ – Rafiq Mazid : ১৯৮৮ সালের কথা। আমি তখন শেরপুর সরকারি কলেজের এইসএসসিতে পড়ি। আমি, বন্ধু জয়, আনিস, কবির, এপোলো, শুভ্রসহ আরো অনেকেই কলেজ ক্যাম্পাসে বসে নানা উটকো বিষয় নিয়ে বাজি ধরতাম মাঝেমধ্যে। যেমন কলেজের পুকুরে কে এক ডুবে ওপার যেতে পারবে, ক্যাম্পাসের লিচু তলা থেকে চোখ বেঁধে দেয়া হবে কে চোখ বাঁধা অবস্থায় সোজা হেঁটে গিয়ে প্রিন্সিপাল স্যারের রুমের সামনের থাম (খাম্বা) যেয়ে ধরতে পারবে। অথবা ক্যাম্পাসে কোন এক অপরিচিত মেয়েকে দেখিয়ে দোয়া হতো তাকে পেছন থেকে ডাক দিয়ে অন্তত দুই মিনিট কথা বলতে হবে।
দুই মিনিটের আগে মেয়েটা চলে গেলে বাজিতে হেরে যেতে হতো। তো এক বার বন্ধু জয় আমাদের কয়েক জনের সাথে বাজি ধরলো। কোন রকম পানি না খেয়ে এক টানা অনুরাধার ১০ মন্ডা খেতে পারবে কে? পারলে বিল আমি দিবো, আর না পারলে সে দিবে। কথা মতো কাজ। ক্যাম্পাস থেকে রওনা হলাম। শহরের ঐতিহ্যবাহি অনুরাধার মন্ডার কদর বা নাম ছোটবেলা থেকেই শুনে আসতেছিলাম। তবে বর্তমানে প্রতি পিস মন্ডার দাম হয়েছে ২৫ টাকা। কিন্তু সে সময় দাম ছিলো ছোট সাইজের ২ টাকা আর বড় সাইজের ৫ টাকা পিস। এরপর ৫/১০ এবং সর্বশেষ ১০/২০ হলেও এখন ১০ টাকা সাইজের মন্ডা তৈরী করা হয় না।
যাই হোক আমরা ৫/৬ বন্ধু বাজি ধরে জয়ের সাথে শহরের নিউ মার্কেট মোড়ে আসি অনুরাধা মিস্টান্ন ভান্ডারে। এরপর এক এক করে দুই জন আউট হয়ে যায় ৫ টা ও ৭ টা করে মন্ডা খেয়ে। কারণ মন্ডা শুকনো থাকায় পানি ছাড়া এক টানা ৫/৬ টার বেশি খাওয়া যেতো না। এরপর আমার পালা। এক এক করে ৬ টা খাওয়ার পর একটু ঘাবড়ে গেলাম। ভাবলাম পানি খওয়া ছাড়া আর উপায় নেই। তারপরও আমি একটু থেমে মুখের লালা দিয়ে গলাটা ভেজানোর চেষ্টা করি। এক পর্যায় সফল হই। শুরু করি বাকী ৪ টা মন্ডা খেতে। অনেক কষ্টে ও আস্তে আস্তে শেষ করলাম এবং পানি খেয়ে কোন রকমে বাজিতে জিতে গেলাম।