মোনালিসা আলম : ‘আজ কে আবার হলো তুলশীমালার ভূরিভোজ। তবে আজকের ভূরিভোজটা ছিলো আমার প্রিয়জনদের জন্য। আগেও বলেছি ঢাকাতে আমরা অনেকটাই যৌথপরিবারের আমেজে থাকি। একই বিল্ডিং এর বিভিন্ন ফ্ল্যাটে আমার দুই ননাস, একমাত্র ননদ, এক ভাসুর, এক ভাগ্নি ও আমার পরিবার সহ মোট ছয়টি পরিবারের ৩০/৩৫ সদস্যের এক বিশাল পরিবার আমরা সুখে, দুখে, ভালোবাসায় খুনসুটিতে একসাথেই আছি।
আজ ছুটির দিনে রান্না হলো আমার সেই প্রিয়জনদের জন্য। তুলশীমালা চালের পোলাও, ডিম সহযোগে মুরগীর কোরমা ও গরুর মাংস (পাঁচ বাসায় খাবার পাঠাতে পাঠাতে ছবি তুলতে মনে নাই)? করোনার এই পরিস্থিতিতে আমরা সামাজিক দুরুত্বটুকু বজিয়ে রেখেই ভালোবাসার আদান প্রদানটুকু করছি।
তিনমাস লকডাউনে আটকে যখন দু সপ্তাহ আগে ঢাকা ফিরে এসেছিলাম। আমার এই প্রিয়জনেরা তাদের ভালোবাসা আর যত্নটুকু নিয়ে এমন ভাবে পাশে ছিলো যে, ঢাকা ফিরে এক সপ্তাহ আমার রান্না ই করতে হয়নি। যার দরুন নিশ্চিন্তে আমি তিনমাসের ধুলোময়লা পরিষ্কার করতে পেরেছি। তবে ধুলোময়লা পরিষ্কারের প্রাথমিক দায়িত্বগুলোও কিন্তু তারাই করে রেখেছিলো।

এমনিভাবেই আমরা এই টোনাটুনির পরিবারের যুগেও যৌথ পরিবারকে একটু ফিউশন করে ভালেবাসা আর নির্ভরতাগুলো নিয়ে ছয়টি পরিবার একে অপরকে আগলে আছি। আর আমার সেই প্রিয়জনদের জন্যই একটু গুছিয়ে উঠে আমার আজকের আয়োজন টুকু করা। এর বাইরেও কিন্তু প্রিতিদিন চলছে আমাদের কচুটা, ভর্তাটা, করলার ভাজিটা, যার যার হাতের স্পেশাল আইটেমগুলো নিয়ে তিনতলা থেকে পাঁচ তলা পর্যন্ত ভালোবাসার বাটি দৌড়।?
ওহ যে কথা বলার জন্য লেখার শুরু। মাত্র পাওয়া আপডেট-
আমার শ্রদ্ধেয় দুই ননাস –
এই পোলাও চাল তুমি কোথায় পাইলা?? খুব সুন্দর হইছে তোমার আজকের পোলাও। তোমার দুলাভাই তো খুব মজা করে খাইছে। যাহারা এই কমেন্ট টুকু করেছেন তাহারা সকলেই খুবই পাকা রাধুনী। সকলেই পঞ্চাশোর্ধ বয়সে আছেন। চোখের নিমিষে ৫০/১০০ জনের রান্না করাটা তাদের কাছে কোন ব্যাপারই না।
আমার রান্নার হাতে খড়ি মায়ের রান্না দেখে হলেও হাতটা যতটুকু পেকেছে তা এই মানুষগুলির সহচার্যে থেকেই। আর দুলাভাই রা সব আছেন ষাটোর্ধ বয়সে। বাজার করতে করতে এবং গৃহিণীদের মজার রান্না খেতে খেতে তাদের রসনাও কিন্তু খুবই পরিপক্ক। তাই যে কোন খাবারে তারা সহজে তৃপ্ত হন না।

তাই তাদের কাছে তুলশীমালার এই কদর কিন্তু মোটেই হেলা ফেলার নয়। তৎক্ষনাত ১৫ কেজি তুলশীমালা অনলাইনে অর্ডার করতে আমার উপর হুকুম জারি হইল। এতো মজার চাল তুমি একা আনছো আর আমাদের বলো নাই এইটা মোটেও ভালো করো নাই?।
অতএব Md Daloare Hossain ভাই। আমার ১৫ কেজি তুলশীমালা চাই।? ইনবক্সটা চেক করুন প্লিজ। আস্থা ও ভালোলাগার গল্পগুলো সবসময়ই এমনই মায়াময় ভালোবাসার হয়। সেটা পরিবার হোক আর আপনার ছোট্ট উদ্যোগটাকেই ঘিরে হোক। আপনার পরিশ্রম মেধা আর সততা দিয়েই আপনাকে অন্যের আস্থা ও ভালোলাগাটুকু জয় করে নিতে হবে। যেমনটি নিয়েছে দেলোয়ার ভাই ও তার তুলশীমালা চাল। তুলশীমালা বলতে দেলোয়ার ভাই, আর দেলোয়ার ভাই বলতেই তুলশীমালা। ধন্যবাদ দেলোয়ার ভাইকে আমাদের অপরিচিত এতো সুন্দর একটি চালের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য।’
সূত্র : উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই)।