মোনালিসা আলম : ‘আজ আর নিজেকে নিয়ে নয়। আজ দিবো তুলশীমালা চালের রিভিউ। নভেম্বরে যখন উই তে যোগ দিলাম তখন জামদানী ওয়েভ চলছে আর তার পাশাপাশি নতুন এক চালের নাম শুনলাম #তুলশীমালা।
তুলশীমালার প্রশংসায় কত জনের কত রিভিউ। কপালটা যে একটু কুচকে যায়নি তা বলবোনা। একটু যেনো বিরক্তই হলাম। কি এমন চাল তাই নিয়ে আবার এতো মাতা মাতি। আর আমি তো পোলাও এর চাল সবসময় দেশের থেকে চাষীদের ঘর থেকেই কিনে আনি। কাজেই আমার কাছে এই তুলশীমালার আবার অতো কদর কিসের?
দিন যায় মাস যায় চারিদিকে তুলশীমালার গুনগান বন্ধ হয়না। আর আমারো যেনো মনটা একটু কেমন কেমন করে, তুলশীমালার তরে। বাড়ী থেকে নিয়ে আসা পোলাও এর চাল গুলো প্রায় শেষের দিকে। আর বাজারের প্যাকেট চাল গুলোতো সব নাজিরশালকে কেটে ছোট করে পোলাও চাল বলে চালাচ্ছে। অতএব সিদ্ধান্ত নিলাম দেখা যাক ৫ কেজি অর্ডার করে কেমন গুন এই তুলশীমালার?
অতঃপর Md Daloare Hossain ভাইকে ইনবক্সে অর্ডার করলাম মার্চের ১০/১২ তারিখে। চাল এসে পৌঁছাল ১৫/১৬ তে আমার কোন তাড়া ছিলোনা তাই দেলোয়ার ভাইকে বলেছিলাম তার সময় সুযোগ মতো পাঠাতে। অতপর তুলশীমালা চাল এসে পৌঁছালো কিন্তু ঢাকার বাহিরে যাবার তোড় জোড়ে আমার কাছে তেমন পাত্তা পেলো না তুলশীমালা। ভাবলাম বাড়ী থেকে এসে রান্না করা যাবে। অতপর তিনমাসের লকডাউনে আটকে যাওয়া এবং আজ সপ্তাহ দুয়েক হলো ঢাকা ফিরলাম।
ঘরে ঢুকেই প্রথমে তুলশীমালার প্যাকেট চেক করলাম ঠিক আছে তো? আলহামদুলিল্লাহ কোন পোকা ধরে নি। অতপর একটু গুছিয়ে পরিবারের সদস্যদের জন্য তুলশীমালা রান্না হলো আজ ।
মতামত
?রান্নার সময় আমার : বাহ এমন নরম মোলায়েম একটা প্রলেপ তো অন্য চালগুলোতে থাকে না। কেমন একটা চকচকে ভাব। আর ঘ্রানটাও দারুন ।
?কর্তা : তার আবার গতানুগতিক ধারার বাহিরের কিছুতে অভ্যস্ত হতে একটু সময় লাগে। আর অনলাইনের জিনিস মাত্রই তার কাছে বোনাস। তিনি সরাসরি চাষীর ঘর থেকে ভালো জিনিসটা সংগ্রহ করতেই পছন্দ করেন পরিবারের জন্য সেই তিনিও অবাক করেই বললেন বাহ বেশ ভালো তো চালটা। এরপর এখান থেকেই কিনো।
?আমার তিন বছরের ছেলে : মা কে রান্না কলেছে? আমি বাবা। কেনো?। আজকে খুব বেশি মজা হইছে পোলাও আল কোম্মা। (সে আবার র এর উচ্চারণে ল বলে) পোলাও আর কোরমার দারুন ভক্ত আমার ছেলে। এই বয়সেই তার ঘ্রানেন্দ্রিয় সাংঘাতিক তিক্ষ্ন। যেটার গন্ধ তার নাকে বাজে লাগবে হাজার চেষ্টাতেও সেটা মুখে নিবে না।
?আমার মেয়েরা : মা আজকে পোলাও টা তোমার অন্যদিনের থেকেও বেশি মজা হয়েছে মা।
এই হলো আমার ঘরের তুলশীমালা কথন। ধন্যবাদ দেলোয়ার ভাইকে এতো সুন্দর একটি চালের সাথে আমাদের পরিচিত করিয়ে দেবার জন্য। আর আমি ও আমার পরিবার কিন্তু এখন থেকে তুলশীমালার নিয়মিত ক্রেতা ও ভক্ত হয়ে গেলাম। সত্যি বলছি এই চাল একবার যে খাবে আর রান্না করবে অন্য চাল তার হাতেই উঠবেনা।
শুধুই কৌতুহলে আমার গৃহে যার প্রবেশ হয়েছিলো নিজ গুণে নিজ মহিমায় সেই তুলশীমালা আজ আমার ও আমার পরিবারের সকলের মন জয় করে নিল।
এমনি ভাবেই ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দেশিয় পন্যগুলো আমাদের সকলের কাছে পরিচিত হয়ে উঠুক ও সকলের মন জয় করে নিতে পারুক তার নিজ গুনে ।
যে সকল উইবাসী এখনো তুলশীমালা চাল অর্ডার করেন নি বিনা দ্বিধায় করতে পারেন। ১৭ বছরের সাংসারিক অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। তুলশীমালা আপনাকে নিরাশ করবে না।’
সূত্র : উইমেন এন্ড ই-কমার্স (ফোরাম) উই।