আসমা খাতুন: ‘কিচ্ছু ভালো লাগছে না। চারিদিকে থমথমে অবস্থা, আল্লাহ কবে সব ঠিক করবেন, সেই অপেক্ষা ছাড়া কিছু করার নেই। এমন অবস্থায় ভালো লাগার বিষয় নিয়ে কথা বলি। তুলশীমালা চালের নাম গ্রুপ থেকে আমি প্রথম জানতে পেরেছি। সুগন্ধি চাল বলতে আমি চিনতাম, চিনি গুড়া চাল, কালোজিরা চাল। আর ভাতের চাল আমাদের বাসায় সব সময় মিনিকেট অথবা নাজেশ্বাল চাল আসতো। গ্রুপের এতো প্রসংসা শুনেছি যে এ চাল আমিও নিয়েছি দেলোয়ার ভাইয়ার কাছ থেকে।
তুলশীমালা চালের উৎপাদন নিয়ে একটু জানার চেষ্টা করলাম। তুলশীমালা চাল শেরপুরের চাষীদের কাছে অমূল্য রত্ন। এই চাল দেখতে যেমন ছোট ও মিহি, এর রয়েছে বাহারি সুগন্ধ। তুলশীমালাকে জামাই আদর চাল ও বলা হয়। নতুন জামাই হলেই শ্বশুর বাড়ীতে অবধারিত রান্না হবে তুলশীমালার পোলাও, খিচুড়ি, পায়েস বা পিঠা। মোহ মোহ সুগন্ধ আাশে পাশে জানান দেবে তুলশীমালা চালের রান্না হচ্ছে।
পূর্বে একশ্রেণির অভিজাত কৃষক এই ধান উৎপাদন করতেন। একসময় জমিদার অধ্যুষিত শেরপুর জেলার জমিদাররা এই চালের সুস্বাদু খাবার খেতে অভ্যস্ত ছিলেন। জমিদারদের বাড়ীতে ইংরেজরা আসলে তুলশীমালা চালের যত বাহারি খাবার পরিবেশন করা হতো। যাওয়ার সময় ইংরেজদের খুশি করার জন্য কিছু চাল গাড়ীতে তুলে দেয়া হতো। দূরের বিশেষ বা কাছের আত্মীয়দের তুলশীমালা চাল দেয়ার রেওয়াজ শেরপুরে এখনো চালু আছে।
কৃষক ও কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, তুলশীমালা আলোক সংবেদনশীল আমন প্রজাতির ধান।জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগষ্ট মাসের ১ম সপ্তাহ পর্যন্ত এই ধান লাগানো হয়।অক্টোবর মাসের শেষ থেকে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি ফুল আসে। ডিসেম্বর মাসের ১ম সপ্তাহ থেকে শেষ সপ্তাহে ধান কাটতে হয়। সম্প্রতি তুলশীমালাকে জেলা ব্রেন্ডিং করে প্রচুর প্রচারণা চালানোর ফলে এর আবাদ এবং চাহিদা ও উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে দাবি জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের।’
(ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত)