১৯৭১ সালে পাকিস্তানি নরগোষ্ঠী সারাদেশের ন্যায় শেরপুরের নালিতাবাড়িতে লুটপাট করে। এপ্রিল মাসের শেষদিকে পাকবাহিনী প্রথম নালিতাবাড়িতে প্রবেশ করে। তাদের আগমনের খুশি হয়ে একদল রাজাকার ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ শ্লোগানে পাকবাহিনীকে স্বাগত জানায়, সে সাথে তাদের কাছে পুরো এলাকার সার্বিক অবস্থা অবিহত করে। এরপর তারা তারাগঞ্জ বাজারে কালিমন্দিরের পাশে গৌড়কুন্ডদের দোকান পুড়িয়ে দেয় এবং ভীতির সঞ্চার করে পুরো এলাকাজুড়ে। এভাবে শুরু হয়ে যায় স্থানীয় পাকপন্থীদের লুটপাট। এমন কোন হিন্দু বাড়ি নেই যেখানে লুটপাট হয়নি। এরপর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নালিতাবাড়ির হিন্দু সম্প্রদায় দলে দলে ভারত যেতে বাধ্য হয়। ছাত্র জনতা রাতারাতি পালাতে থাকে। ঐদিন পাকবাহিনী চলে যায় কিন্তু তাদের দোসররা সংগঠিত হতে থাকে। পাকবাহিনীর দোসরদের পরিচালনার দায়িত্ব থাকে স্থানীয় প্রভাবশালীদের উপর এবং তারা কমিটি গঠন করে।
পাহাড়িয়া যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও দুর্গম অঞ্চল হওয়ায় নালিতাবাড়ি থানাকে দু’ভাগে বিভক্ত করা হয়। ভোগাই নদীর পূর্বাঞ্চলকে হালুয়াঘাটের ক্যাম্প থেকে পরিচালনা করা হয় এবং ভোগাই নদীর পশ্চিম অঞ্চল সহ বাকি অংশটুকু আহম্মদনগর পাকবাহিনী ক্যাম্প থেকে পরিচালনা করা হয়। তারা আহম্মদনগর হাইস্কুল ছিল তাদের প্রধান ঘাঁটি। আহম্মদনগর থেকে মাঝে মাঝে নালিতাবাড়ি আক্রমণ করা হত।
তথ্য সূত্র-
? মুক্তিযুদ্ধে শেরপুর
? লেখকঃ আব্দুর রহমান তালুকদার