Our Sherpur

ইন্দিলপুর ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ | হারুনুর রশীদ

ইন্দিলপুর ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ

ইতিহাস ঐতিহ্যে পরিপূর্ণ আমাদের গ্রাম ইন্দিলপুর, যা অনেকেরই অজানা কিম্বা বিস্মৃত। জনস্বার্থে এসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহ্যপূর্ণ স্হান ও স্থাপনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরছি।

ইন্দিলপুর ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ

ইন্দিলপুরের ঐতিহ্যে সবার আগে যে নামটি আসে তা হলো, ইন্দিলপুর ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। মসজিদ সূত্রে জানা যায় এটি ১৬০৪ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত।

ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ

এ কথা সবরই জানা যে, ভারতবর্ষে এককালে হিন্দুদের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিলো। সেই সময় মুসলমানগণ ছিলেন সংখ্যালঘু, গরিব,ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাহীন। হিন্দুদের এই আধিপত্যের প্রভাবে অন্যান্য ধর্মবলম্বী বিশেষত সংখ্যালঘু মুসলমানগণ ছিলেন তাদের দৃষ্টিতে নিকৃষ্ট ও নিগৃহীত। মুসলমানরা কেউ দাড়ি রাখলে বিশেষ কর দিতে হতো৷ গরু জবাই বা কুরবানি করতেও অনুমতি নিতে হতো। মসজিদ নির্মাণ তো চরম দুঃসাহসিকতা, বিচক্ষণতা ও ধর্মপরায়ণতার সমন্বয়ের সুফল। সেই চরম দুঃসাহসিক, বিচক্ষণ ও ধর্মপরায়ণ ব্যক্তিটি হলেন, “রসুল মাহমুদ ব্যাপারী” ওরফে “উছলে ব্যাপারী”। সর্বসাধারণের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠা করেন, ইন্দিলপুর জামে মসজিদ। যার পরবর্তী নাম, ইন্দিলপুর পূর্বপাড়া জামে মসজিদ এবং বর্তমান নাম, ইন্দিলপুর ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ

বর্তমান শেরপুর তৎকালীন দশকাহনিয়া বাজু। এই দশকাহনিয়া বাজুর ফারায়েজ (ভূমি বন্দোবস্তকারী) হিসেবে কর্মরত ছিলেন জনৈক রসুল মাহমুদ ব্যাপারী। তিনি টাঙ্গাইল মতান্তরে সিরাজগঞ্জের যমুনার পাড় থেকে চাকুরীর সুবাদে দশকাহনিয়া তথা শেরপুরে আসেন। অবশ্য বর্তমান সিরাজগঞ্জ সেই আমলে টাঙ্গাইলের অন্তর্গত ছিলো। তিনি বসতি গড়েন রাজধানী গড়জরিপার অদূরে ইন্দিলপুর গ্রামের পূর্বপাড়ায়। স্থানীয় মুসলমানদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় তার বাড়ির পাশেই স্থাপন করেন ছোট্ট একটি মসজিদ। নাম দেন ইন্দিলপুর জামে মসজিদ

সেই আমলের উল্লেখযোগ্য বাহন ঘোড়া ও ঘোড়াগাড়ি। বহু দূরদূরান্ত থেকেও অনেকে ঘোড়ায় চেপে এই ইন্দিলপুর জামে মসজিদে জুম্মা নামাজ আদায় করে যেতেন। অনেকেই আবার আগের দিন বেড়াতে এসে নিকটস্থ আত্মীয়ের বাড়ি থেকে পরদিন (শুক্রবার) জুম্মা নামাজ আদায় করে ফিরতেন।

মসজিদটি প্রথম দিকে বাঁশ, খড় দিয়ে তৈরি কুঁড়েঘর ছিলো। পরবর্তীতে টিনের ঘর। আরও পরে আধা পাকা চৌচালা টিনের ঘর এবং বর্তমানে দু’তলা বিশিষ্ট দালান ঘর। এখনও প্রবীণ ব্যক্তিদের অনেকেই এই মসজিদে আসেন। প্রাচীন ঐতিহ্যে শামিল হয়ে শান্তি অনুভব করেন, স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। তৃণমূল থেকে উঠে আসা এই ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদটি প্রচারণায় একদম পিছিয়ে পড়েছে। উপযুক্ত প্রচারণা পেলে ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদটি পূরাকীর্তি হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে। সেই সাথে ঐতিহ্যবাহী হিসেবে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে।

ইন্দিলপুর জামে মসজিদ

যোগাযোগ: শেরপুর টাউন থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে ইন্দিলপুর গ্রাম। ইন্দিলপুর পূর্বপাড়ায় অবস্থিত এই ইন্দিলপুর ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ

Leave a Reply

Scroll to Top