জগৎপুর একটি সুবিধাবঞ্চিত অনুন্নত এলাকার নাম যেখানে বিদুৎ পৌঁছেনি, রাস্তার উন্নতি হয়নি, নেই তেমন শিক্ষার আলো। শেরপুর জেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তর এবং ঝিনাইগাতী উপজেলা থেকে ১৩ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত জগৎপুর গ্রামটি, তৎকালীন সময়ে হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম ছিলো।
সারাদেশের ন্যায় শেরপুরেও শত্রুর আক্রমণ চলে অতর্কিত ভাবে। একদিন সকাল ১০ টার দিকে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা মিলে তিনদিক থেকে ছোট্ট গ্রামটিকে ঘিরে ফেলে, কিছু বুঝে উঠার আগেই গুলিবর্ষণ শুরু করে নির্মমভাবে ৩০-৩৫ জনকে হত্যা করে। তাদের আর্তচিৎকারে আকাশ-বাতাশ ভারী হয়ে ওঠে। কিছু মানুষ দৌড়ে কচুরিপানার নিচে আত্মগোপন করে জীবন রক্ষা করার জন্য। আর কিছু মানুষ যার যার মতো করে জীবন বাঁচাতে পালাতে থাকে। অনেক্ষণ গোলাগুলি ও হত্যাকান্ডের পর শুরু করে লুটপাট। স্থানীয় জনসাধারণ দলে দলে হিন্দু পল্লীতে প্রবেশ করে লুটপাট করতে। এমতাবস্থায় পাকিস্তানিরা সেখানে আবার প্রবেশ করে এবং আক্রমণ চালয়। কালবৈশাখী ঝড়ের ন্যায় মূহুর্তের মধ্যে লন্ডভন্ড করে ফেলে গ্রামটিকে।
রাতের আধারে পৈতৃক ভিটে-মাটির মায়া ত্যাগ করে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ভারতে প্রবেশ করে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হত্যাকান্ডে শিকার কয়েকজনের নাম নিচে উল্লেখ করা হলোঃ-
১. ভজন চন্দ্র দে
২. ধরণী মোহন দে ও তার স্ত্রী
৩. সুধারানী দে
৪. দেবী চরণ দে
৫. গঙ্গা চরণ দে
৬. কার্তিক দে
৭. হেমচন্দ্র দত্ত
৮. দ্বিজেন চন্দ্র দত্ত
৯. জ্ঞান দা
১০. মানিক ফকির
১১. আলতাব প্রমুখ। এছাড়াও বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে আরও ৪ জন কে হত্যা করে একই দিনে।
তথ্য সূত্র- মুক্তিযুদ্ধের কিশোর ইতিহাস।