মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ
২৫ মার্চ কালো রাতে ঢাকায় নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটায় পাকিস্তানি নর গোষ্ঠী, তারপর ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে আক্রমন শুরু করে। তার প্রতিরোধে বাঙ্গালিরা যুদ্ধ শুরু করতে বাধ্য হয়। পাকিস্তানি বাহিনী প্রতিটি জেলা-উপজেলায় আক্রমন চালাতে শুরু করে। বাংলাদেশের ছাত্র, যুবক, কৃষক, শ্রমিক, নারীপুরুষ সর্বস্তরের মানুষ পাক বাহিনীর আক্রমণে না পেরে উঠে বাধ্য হয়ে শরনার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয়। ভারতে শরনার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
শেরপুরের ছাত্র-জনতা, নারীপুরুষ প্রতিরোধ যুদ্ধে প্রাথমিকভাবে পাকিস্তানিদের হটাতে সক্ষম হলেও পরবর্তীতে আরও বেশি সৈন্য নিয়ে এসে পাক বাহিনী শেরপুর আক্রমণ করে। দেশীয় অস্ত্র ও গুটিকয়েক রাইফেল নিয়ে গড়ে তোলে প্রতিরোধ, পাকবাহিনীর সাথে যুদ্ধে টিকতে পারে না শেরপুরের মুক্তিযুদ্ধারা। এ পরাজয় গুলো মুক্তিযুদ্ধাদের আরও বেশি স্বাধীনচেতায় উজ্জীবিত হতে সাহায্য করে।
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য সারাদেশের ন্যায় শেরপুরের মুক্তিযোদ্ধারও স্বাধীনচেতায় উজ্জীবিত হয়ে প্রশিক্ষণের জন্য রাতে আঁধারে প্রিয়জনদের ছেড়ে মাতৃ ভূমি থেকে শত্রু বিতারিত করতে ফাঁড়ি দেয় পাশের দেশ ভারতে। ভারতের বিভিন্ন জেলায় অবস্থান করা মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণের জন্য ভারত সরকারের সহায়তায় তৈরি করা হয় প্রাথমিক ট্রেনিং ক্যাম্প। পরবর্তীতে ভারতে বিভিন্ন সেনাক্যাম্পে উচ্চতর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
ভারতে প্রশিক্ষিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধারা ফিরে এসে শেরপুর তথা নিজ নিজ এলাকা শত্রু মুক্ত করতে মরিয়া হয়ে ওঠে এবং পাকিস্তানিদের আক্রমনের কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন, সাথে পাকিস্তানিদের পা-চা’টা গোলামদের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। অনেক রক্তক্ষয়ের পর ধাপে ধাপে শেরপুর শত্রু মুক্ত হয়। ৪ ডিসেম্বর শত্রু মুক্ত হয় নকলা, তার দু’দিন পর ৬ ডিসেম্বর মুক্ত হয় শ্রীবরদী। ৭ ডিসেম্বর শেরপুর শত্রু মুক্ত হয়। এদিন অধিনায়ক জগজিৎ সিং অরোরা হেলিকপ্টারে করে শেরপুর শহরের দারোগা আলী পার্কে অবতরণ করেন এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
তথ্য সূত্র:- উইকিপিডিয়া
মুক্তিযুদ্ধে কিশোর ইতিহাস (বই)