পানিহাটা তারানি পাহাড়
শেরপুর জেলা তথা বাংলাদেশের মধ্যে এক ভিন্নধর্মী প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়া উঠা পর্যটন এলাকা হলো নালিতাবাড়ি উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পানিহাটা!
যদিও প্রশাসনিক ভাবে সেরকম পদক্ষেপ নিয়ে পানিহাটা পর্যটন এলাকার কৃত্রিম সৌন্দর্য এখনো বৃদ্ধি করা হয়নি। কিন্তু প্রকৃতি এই এলাকাটিকে যথাযথ প্রকৃতির সৌন্দর্য দিয়েই সাজিয়ে রেখেছে। ভারত থেকে বয়ে আসা খরস্রোতা ভোগাই নদী পাহাড়ি টিলার পাশ ঘেঁসে বাংলাদেশের ভিতরে প্রবেশ করেছে।
নদীটির পশ্চিম আর দক্ষিণ পাশে সবুজের টিলা। ভোগাই নদীটি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক হয়ে বেয়ে গেছে। নদীটির উত্তর পাশে রয়েছে কাঁশবন আর ভারতের সীমান্ত। বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের কাছেই রয়েছে ভারতের পাকা সীমান্ত সড়ক, আর বড়সড় একটা ব্রীজ। নদীটির দক্ষিণের টিলায় দাড়ালে ২০০ গজ দূরে, অতি কাছ থেকেই ভারতের ব্রীজ। ব্রীজের উপর দিয়ে অনবরত ছুটে চলা ভারতের গাড়িগুলো সব সময় দেখা যায়! পূর্ব দিক থেকে পাহাড়ের গাঁ ঘেঁসে ভোগাই নদীতে এসে মিশেছে ছোট একটি ঝরণা।
টিলা থেকে দূরে উত্তর দিকে চোখ মেলে তাকালে, ভারতের তুরা জেলাকে দেখা যায়। উচু নিচু দু’চোখ জুড়ানো সবুজের ঢেউ খেলা টিলাগুলো যে কাউকে আকর্ষণ করতে সক্ষম! আর এত কাছ থেকে ভারতকে দেখার সুযোগ অন্য পর্যটন এলাকাগুলোতে পাওয়া যায় না! এটি পানিহাটার এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
অন্যদিকে, এর সাথেই রয়েছে খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের উপাসনালয় পানিহাটা পাদ্রি মিশন। যদিও এটি নিয়ন্ত্রিত এলাকা, তবুও পাহাড়ের উচু নিচুতে উঠা নামার জন্য পাকা সিড়ি আর বিভিন্ন ফুলের গাছগুলো মিশনের প্রাকৃতিক আর কৃত্রিম সৌন্দর্য মিলে মিশে বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে। এখানে একটি চিকিৎসা কেন্দ্র, বিদ্যালয়, ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য হোস্টেল রয়েছে। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর দর্শনার্থীরা এখানে এসে ভিড় করেন।
তবে পানিহাটার ১.৫০ কি.মি. রাস্তা বর্ষাকালে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে আর বাস চলাচলের জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত।
স্থানীয় প্রশাসন বা সরকার যদি এগিয়ে এসে দ্রুততার সাথে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করেন আর পানিহাটার কৃত্রিম সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেন, তাহলে এই এলাকাটি হতে পারে বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্র! আর প্রচুর রাজস্ব আয়ের মাধ্যম।
পানিহাটা তারানি পাহাড় শেরপুরের সীমান্তবর্তী হওয়ায় শুধুমাত্র নালিতাবাড়ি উপজেলা হয়েই প্রধানত যেতে হয়। জেলা শহর শেরপুর থেকে, নালিতাবাড়ি হয়ে সোজা উত্তর দিকে, নাকুগাঁও স্থলবন্দর থেকে পূর্ব দিকে, ভোগাই ব্রীজ পাড় হয়ে, বৈশাখী বাজার হয়ে, আবার উত্তর দিকে ১.২০ কি.মি. যেতে হয়। অর্থাৎ সড়ক পথে শেরপুর থেকে প্রায় ৪৫ কি.মি. আর নালিতাবাড়ি থেকে ১৫ কি.মি. দুরে অবস্থিত পানিহাটা পর্যটন এলাকা।
তথ্য সংগ্রহঃ সাগর আহমেদ।