একজন “সাদা মনের মানুষ” একটা সমাজকে, তাঁর আশেপাশের মানুষকে কতটা বদলে দিতে পারেন, কতটা উন্নতির দিকে পরিচালিত করতে পারেন, আর পথ সন্ধানী প্রজন্মকে দেখিয়ে দিয়ে যান কাঙ্খিত সেই সফলতার আলো, সেটার মূল্য আমরা কখনো বিচার বিশ্লেষণ করে দেখিনা। কারণ, এই “সাদা মনের মানুষ” গুলো নিজের নাম, যশ প্রচারের জন্য বা নিজের ব্যক্তিস্বার্থকে রক্ষার জন্য কাজ করেন না। তাঁরা অন্যের সেবা করাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব মনে করেন। এই দায়িত্বকে অবহেলা করাকে তাঁরা অন্যায় ভাবেন। সে লক্ষ্যেই নিজেকে নিঃস্বার্থভাবে বিলিয়ে দেন সমাজের জন্য, প্রত্যেকটা মানুষের জন্য! অথচ স্বার্থ সন্ধানী, নাম-যশ অর্জনে মগ্ন কথিত সমাজ সংস্কারক, সেসব নামধারী দানবীর লোকগুলোর অন্যায় দাপটের কাছে “সাদা মনের মানুষ” গুলোর অস্থিত্ব হারিয়ে যায়। এখন এমনটা অহরহ ঘটছে যে, যেসব এলাকায় “সাদা মনের মানুষ” গুলো তাঁদের কার্যক্রম পরিচালিত করছেন, সেখানে কথিত নামধারী কিছু লোকের সম্মানে, কার্যক্রমে ব্যাঘাত হচ্ছে। তার মানে হলো, “সাদা মনের মানুষ” গুলোর কারণে কথিত সেই লোকগুলো নিজেদেরর সুনাম, নিজের প্রচার-প্রসার সহ কোন কাজই মনঃপুত ভাবে করতে পারছেনা। বিষয়টা এরকম যে, আমরা পাঠ্য বইয়ে পড়েছিলাম, রাজা যতই রাজ্যের মানুষকে খাওয়ান বা দান করুন না কেন “হাতেম তায়ের” ব্যবহার, অাতিথেয়তা, মানুষের প্রতি তাঁর যে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, তার কাছে রাজার অবদান যেন সবি তুচ্ছ! তাই রাজা সিন্ধান্ত নিলেন, পিশাচের মাধ্যমে গোপনে এই “হাতেম তায়ীকে” মেরে ফেলবেন! যাতে রাজ্যের সকল মানুষ একমাত্র তাঁরই প্রসংশা করে। ঠিক তেমনি, কথিত লোকগুলো বর্তমান সময়ে এসব “সাদা মনের মানুষ” গুলোকে নানা ভাবে হয়রানি করে, কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে, নিজেদেরকে সমাজে অন্যায় ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে যাচ্ছে। আর তাই “সাদা মনের মানুষ” গুলো পথে পথে বাঁধার মুখোমুখী হতে হতে হারিয়ে যাচ্ছেন। এজন্যই হয়ত আগের মত বর্তমান সমাজে আর “সাদা মনে মানুষ” গুলোকে খুঁজে পাওয়া যায় না!এই সমস্যার প্রতিরোধ অন্য সব সমস্যার মতই সম্ভব। আমি এখানে প্রথম কারণ হিসেবে বলতে চাই, উক্ত সমাজের শিক্ষিত তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে। তরুণ প্রজন্মের উচিৎ এই সব “সাদা মনের মানুষ” গুলোকে ছায়ার মত করে আগলে রাখা। অদৃশ্য ষড়যন্ত্রকে শক্ত হাতে প্রতিহত করা। কারণ, একজন পথ পদর্শক ছাড়া কোন জাতির আলোর পথ, সফলতার পথ, উন্নতির পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়! মাত্র একজন দক্ষ পথপদর্শকও পারেন কোটি কোটি পথ ভুলা মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে। আর ইতিহাসের কোন সভ্যতায় সফলতা ছুঁতে পারে নাই পথ পদর্শক ছাড়া। আর এই “সাদা মনের মানুষ” গুলোই পারেন আমাদের এত সব অর্জনগুলো এনে দিতে!
লেখক- কবি সাগর আহমেদ
শেরপুর সরকারি (বিশ্ববিদ্যালয়) কলেজ।
(ইংরেজি বিভাগ)