নাকুগাঁও স্থলবন্দর শেরপুর
বাংলাদেশের কয়েকটি নামকরা স্থলবন্দরের মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগের, শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার, নাকুগাঁও স্থলবন্দর অন্যতম। এই বন্দর দিয়ে ভারত এবং ভূটান থেকে কয়লা, পাথর আমদানির পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যসামগ্রী প্রতিনিয়ত আমদানি-রপ্তানী করা হয়ে থাকে। ২০১৫ সালের ১৮ জুলাই পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা দেয় তৎকালীন সরকার। এর পর থেকে পুরোদমে যাত্রা শুরু হয় নাকুগাঁও স্থলবন্দর।
বন্দরে “শ্রমিক ইউনিয়ন শাখার” অন্তর্ভূক্ত শ্রমিক রয়েছে প্রায় ৮০০ জন। এছাড়া দিন হিসেবে কাজ করেন প্রায় ১ হাজার ৩০০ জনের কাছাকাছি। উল্লেখ্য যে, এই শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ১ হাজারের মত শ্রমিকই নারী শ্রমিক! এরা দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে মজুরি পেয়ে থাকেন। এখানে নাকুগাঁও লোড আনলোড শ্রমিক ইউনিয়ন, নাকুগাঁও আমদানী রপ্তানী কারক সমিতি ছাড়াও শ্রমিক-ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন এবং সমিতি রয়েছে।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে এসে কয়লা, পাথর, ও অন্যান্য পণ্যসামগ্রীর কেনা-বেচা করে থাকেন। ভারত ও ভূটানের ব্যবস্যায়ীদের কাছ থেকে বাংলাদেশের ব্যবস্যায়ীরা কয়লা, পাথর কিনেন। ভারতের ট্রাক বন্দরে এসে নির্দিষ্ট গন্তব্যে মাল নামিয়ে দিয়ে যায়।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রায় সবাই এখানকার স্থানীয়। এই স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরর কাছ থেকে আবার দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা মালমমাল কিনে নিয়ে যান। বিশেষ করে, বর্ষা মৌসুমে বন্দরটির আমদানি-রপ্তানী কমে যায়। শীতের মৌসুমে পুরোদমে বন্দরটির কার্যক্রম চলে।
বর্তমানে বন্দরটি ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হচ্ছে। নাকুগাঁও বাজার থেকে একটু সামনে উত্তর দিকে বন্দরটি অবস্থিত। পাকা রাস্তার দু’পাশে অর্থাৎ পূর্ব ও পশ্চিম পাশে স্তুপ আকারে সারি সারি করে পাথর, কয়লা রাখা হয়েছে। আরো কিছু সামনে আগালেই ‘নাকুগাঁও কাস্টম কার্যালয়ের বিভিন্ন বহুতল ভবন ও চেকপোষ্ট চোখে পড়বে।
এখানে প্রতিদিন বিজিবি সদস্যরা টহলে থাকেন। সেখান থেকে একশো গজ সামনেই ভারতের সীমান্ত। ওপাড়েই রয়েছে বিএসএফ ক্যাম্প। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ভোগাই নদী। ভারতের সবুজ পাহাড়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বিএসএফ ক্যাম্প, স্থলবন্দর, সহ পারিপার্শ্বিক পরিবেশ দেখতে প্রতিদিন প্রচুর দর্শনার্থী এখানে আসেন।
জেলা শহর শেরপুর থেকে নালিতাবাড়ি হয়ে উত্তর দিকে মাত্র ১২ কিলোমিটার আসলেই এই নাকুগাঁও স্থলবন্দর।