আহম্মদনগর ছোট্ট একটি গ্রামের নাম, কিন্তু এ গ্রামকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হাতিপাগার, বারোমারি, নন্নী, হলদিগ্রাম, নকশী, বিওপি, তিতআনী এবং কয়রোডসহ অন্যান্য গ্রামগুলোতে অত্যাচারের জন্য শক্তিশালী সদর ঘাঁটি স্থাপন করেন আহম্মদনগর হাইস্কুলে। জেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে, ঝিনাইগাতী থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং নালিতাবাড়ি থেকে ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে এ গ্রামের অবস্থান।
ক্যাম্পের নিরাপত্তার জন্য সর্বদা ৭০-৮০ জন জোয়ান মোতায়েন থাকতো। মাঠের মাঝখানে থাকতো বড় বড় মার্টার। ক্যাম্পে যেন মুক্তিযোদ্ধারা প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বাঁশের চুক্কি ঘন ঘন করে অনেক দূর পর্যন্ত পুঁতে রাখা হতো। এছাড়াও কাঁটাতারের বেড়াও ছিল। মুক্তিযোদ্ধা যেন কোন ভাবেই ক্যাম্পে না আসতে পারে ক্যাম্পের চারপাশে Anti Personal মাইন পুঁতে রাখা হতো।
ক্যাম্প থেকে ২০-২৫ জন পাকিস্তানি আর্মি এবং স্থানীয় রাজাকারদের সমন্বয়ে গ্রামে লুটপাট, নিরীহ মানুষদের উপর নির্মমভাবে অত্যাচার করতো। তাদের কাছ থেকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধান চাইতো এবং নারীদের উপর চালাতো নিপিড়ন-নির্যাতন। ভোগাই নদীর থেকে শ্রীবর্দী পর্যন্ত আহম্মদনগর মেজর রিয়াজের অধীনে ছিল। নভেম্বর মাসে আহম্মদনগর হাইস্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ওমর আলী ও খালেক নামের ২ জন ছাত্রকে নির্মমভাবে হত্যা করে। দুই ছাত্রের অপরাধ তাদের ভাই এবং বাবা মুক্তিযোদ্ধা, তাই তারা যে কোন সময় তথ্য প্রাচার করতে পারে মুক্তিবাহিনীর কাছে। রাজাকার সৈয়দুর রহমান ফুটি মিয়া কে সন্দেহের বশে হত্যা করে। এছাড়াও আরও বহু লোকজন হত্যা করে, তাদের কয়েকজনের নাম–
কৈফুল বেগম, ওয়াজ উদ্দিন এবং একই পরিবারের ৩ জন মামুদ আলী, আবু মিয়া, ও সোরহাব আলী কে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরবর্তীতে তালুকদার বাড়িসহ ৪-৫ টি বাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ধ্বংস করে আরও বহু বাড়িতে লুটপাট করে।
তথ্য সূত্র- মুক্তিযুদ্ধের কিশোর ইতিহাস।