Our Sherpur

সন্ধ্যাকুড়া রাবার বাগান | হাছিনা আক্তার শিমুল

সন্ধ্যাকুড়া রাবার বাগান

”মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর জেলা। এখানে প্রকৃতি প্রদত্ত বিভিন্ন পাহাড়, বনভূমি, ঝর্ণা ছাড়াও রয়েছে মানুষের তৈরী বেশ কিছু আকর্ষণীয় সংযোজন। তেমনি এক মনোমুগ্ধকর বাগান হচ্ছে “সন্ধ্যাকুড়া রাবার বাগান বা সন্ধ্যাকুড়া জি এস রাবার বাগান”। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার গারো পাহাড়ে অবস্থিত এই রাবার বাগান।

Products list of Our Sherpur
শেরপুর জেলার যেসব পণ্য আওয়ার শেরপুর এ পাওয়া যায়।

এটি ঝিনাইগাতি উপজেলা সদর থেকে ৮ কি:মি উত্তরে ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেষে বাংলাদেশের গারো পাহাড়ে অবস্থিত। এখানকার সারি সারি রাবার গাছ, বিভিন্ন ফলজ, শাল, গজারি ও সেগুনবনের বিন্যাস খুব সহজেই প্রকৃতি প্রেমীদের মনে দোলা দিয়ে যাবে। শেরপুরের বিশিষ্ট শিল্পপতি ইদ্রিস মিয়া ১৯৮৯ সালে সরকারের কাছ থেকে ৮০ একর জমি লিজ নিয়ে এ বাগান প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বর্তমানে রাবার গাছের সংখ্যা ৯ হাজার। ৫ হাজার গাছ থেকে প্রতিদিন ৩শ কেজি রাবার (কষ) উৎপাদিত হয়।

বিশেষ পদ্ধতিতে রাবার গাছ থেকে কষ সংগ্রহ করে তা কারখানায় মজুত করে রাখা হয়। পরে তা বিক্রির উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রেরণ করা হয়। বাগানে রোপণ করা রাবার গাছের বয়স কমপক্ষে ৭ বছর হলে তা থেকে রাবার উৎপাদন করা যায়। প্রতিটি রাবার গাছ ২০/২৫ ফিট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। গাছের বয়স ৪০ বছর পর্যন্ত রাবার সংগ্রহ করা যায়। এরপরে উৎপাদন আস্তে আস্তে হ্রাস পেতে থাকে। তখন এই গাছগুলো বিক্রি করে দেয়া হবে। এই রাবার বাগানে কাঁঠালসহ অন্যান্য ফলজ বৃক্ষও লাগানো আছে।

সন্ধ্যাকুড়া রাবার বাগান
সন্ধ্যাকুড়া রাবার বাগান | ছবি: রূপসী শেরপুর

এই বাগানটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি গারো এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার সহ মোট ২০ জন নিয়মিত কর্মচারী ছাড়াও আরো অনেক শ্রমিক এখানে নিয়মিতভাবে কাজ করে। রাবার বাগান ছাড়াও এই এলাকার আশেপাশে আরো অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম। বাগানের সারিবদ্ধ গাছ, সবুজ বনানী, অন্যপ্রাণীদের বিচরণ, রাবার আহরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতি দেখার জন্য এখানে স্থাপন করা যেতে পারে পর্যটন কেন্দ্র।

রাবার চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা। বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত এই বাগানের মতো যদি আরো জমি বরাদ্দ দেয়া হয় তাহলে বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক করা সম্ভব। সরকারি সহায়তা পেলে অথবা বেসরকারি উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে এই পাহাড়ি এলাকায় সফলভাবে আরো অনেক রাবার বাগান এবং পর্যটন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এতে যেমন দেশের রাবারের চাহিদা পূরণ হবে তেমনি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি হওয়াতে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথ সুগম হবে।”

Our Sherpur | YouTube

Leave a Reply

Scroll to Top