Our Sherpur

পাগলপন্থী বিদ্রোহ | নালিতাবাড়ির ইতিহাস

পাগলপন্থী বিদ্রোহ

নালিতাবাড়ির ইতিহাস ঘাটলে কিছু উল্লেখযোগ্য বিখ্যাত ঘটনা এবং বিদ্রোহের ইতিহাস জানা যায়। তাঁদের মধ্যে জানকুপাথর ও দোবরাজপাথর ছিলেন উনিশ শতকের তৃতীয় দশকের দুইজন বিদ্রোহী এবং শেরপুরে সংঘটিত পাগলপন্থী বিদ্রোহের অন্যতম নায়ক। তাঁরা গারো-হাজংদের নেতা টিপু শাহের অনুগামী ছিলেন এবং ১৮২৭-১৮৩৩ সালে ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রজা বিদ্রোহের অন্যতম নেতা ছিলেন। শেরপুরের পশ্চিমদিকে করৈবাড়ি পাহাড়ের পাদদেশ জানকুপাথরের একটি প্রধান আস্তানা ছিলো।

Products list of Our Sherpur
শেরপুর জেলার যেসব পণ্য আওয়ার শেরপুর এ পাওয়া যায়।

১৮৩১ সালে ময়মনসিংহের কালেক্টর নতুন বন্দোবস্ত অষ্টম আইন হিসেবে ঘোষণা করা হলেও বিদ্রোহ চালিয়ে যান জানকুপাথর ও দোবরাজপাথর। তাদের নেতৃত্বে শেষ পর্যায়ে সংগ্রামের রূপ চরম আকার ধারণ করে। ১৮৩৩ সন পর্যন্ত জানকুপাথর করৈবাড়ি পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ও দোবরাজপাথর নালিতাবাড়ী উপজেলার নিকটবর্তী কোনো একস্থান থেকে শেরপুর অভিমুখে দ্বিমুখী আক্রমণ পরিচালনা করেন।

বিদ্রোহী পাগলপন্থীগণ শেরপুরের জমিদারবাড়ি, কাছারিবাড়ি, জমিদারদের আশ্রিত লাঠিয়াল বাহিনীর সর্বস্ব লুট করে ও থানায় আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে শেরপুর জনশূন্য হয়ে পড়ে। এগার-বারটি ক্ষেত্রে সরকার ও বিদ্রোহী বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ইংরেজ সরকার বিদ্রোহ সংশ্লিষ্ট লোকজন ও নিরীহ লোকজনকে পাইকারি ভাবে হত্যা শুরু করে এবং বিদ্রোহের নেতাদেরকে ধরিয়ে দেবার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে। অতপর বিদ্রোহের দলপতিরা ধীরে ধীরে আত্মসমর্পণ করে। জানকুপাথর উত্তরের পাহাড়ে পালিয়ে যান এবং দোবরাজপাথর পূর্বাঞ্চলে আত্মগোপন করেন। দুর্গাপুর উপজেলার ‘দোবরাজপুর’ গ্রাম দোবরাজ পাথরের স্মৃতি বহন করছে।

বর্তমান সরকার ও স্থানীয় প্রকাশন এবং নালিতাবাড়ির সচেতন নাগরিকদের উচিৎ, এসব ইতিহাস বিজড়িত স্থান, স্থাপত্য এবং নামগুলোকে সংরক্ষণ করে নতুন পজন্মের কাছে তুলে ধরা।

মোঃ সাগর আহমেদ
লেখক: মোঃ সাগর আহমেদ

Leave a Reply

Scroll to Top